এতকাল যেটা সিনেমার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এবার তা বাস্তবে করে দেখালেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ বাস্তবেও মানুষ এখন অদৃশ্য হতে পারবে! কোন জাদু বিদ্যা লাগবে না। বিজ্ঞান এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, হ্যারি পটার সিনেমায় দেখেছিলেন বিশেষ পোশাক ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’, যা শরীরে পড়ে অদৃশ্য হয়ে যায় নায়ক।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, বিজ্ঞানীরা এমন ধরনের কাপড় তৈরিতে সফল হয়েছেন। এটি এমন এক ধরনের কাপড় যা মানুষকে মূলত ছদ্মবেশে অদৃশ্য করে রাখবে। ছদ্মবেশে অদৃশ্য হওয়ার এই প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক ব্যবহারে ইতিমধ্যে সফল হয়েছে বিট্রিশ সেনাবাহিনী।
নতুন আবিষ্কৃত এই কাপড়ে রয়েছে ছোট ছোট লাইট সেন্সিং সেল, যা প্রতিপক্ষের দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হওয়ার সুবিধা দিতে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে পোশাকের রঙ পরিবর্তন করতে সক্ষম।
রঙ চিহ্নিত করার পরে একটি ইলেকট্রিক সিগন্যালিং সঞ্চারিত হয় এই কাপড়ে। কাপড়ের একবারে ওপরের স্তরটি হিট-সেনসিটিভ ডাই প্রযুক্তিতে। যা রঙ বদলে আশপাশের পরিবেশের রঙ ধারণ করতে পারে।
তাই এই কাপড় গায়ে জড়িয়ে কোথাও স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে, একটু সময় পরেই সেখানকার পরিবেশ অনুযায়ী রঙ বদলে ফেলবে কাপড়টি। ফলে বেশ খানিকটা দূরত্ব থেকে কারো পক্ষে বোঝা দায় হবে যে সেখানে কেউ রয়েছে।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, যদি পাহাড়ে অবস্থান করা হয়, তাহলে পাহাড়ের রঙে বদলে যাবে কাপড়। কিংবা গাছের পাশে থাকলে গাছের রঙে বদলে যাবে। অর্থাৎ যে কোনো পরিবেশের রঙে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলে যাবে।
শুধু তাই নয়, তাজ্জব করে দেওয়া আরো বড় খবরটি হচ্ছে, শক্র পক্ষের ইনফ্রা-রেড ট্রাকার বা তাপ সচেষ্ট গ্যাজেটের মাধ্যমেও তা শনাক্ত করা সম্ভব হবে না।
পরিবেশের ছদ্মবেশে অদৃশ্য হওয়ার এই কাপড় উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা।
এ প্রসঙ্গে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ঝাননি ঝাও বলেন, ‘ছদ্মবেশে অদৃশ্য হওয়ার সামরিক এই আবরণ উদ্ভাবনে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। সামরিক বাহিনীতে বর্তমানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়ে থাকে এ ধরনের প্রযুক্তির গবেষণায়, কিন্তু সেগুলো সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবেশ বুঝে রঙ ধারণ করতে পারে না। আমাদের উদ্ভাবিত নতুন প্রযুক্তির কাপড় সৈন্য এবং সামরিক যানবাহনেও সফলভাবে ব্যবহার করা যাবে।’