ব্যারিস্টার সুমন
আসসালামু আলাইকুম, ডেইলীসুরমা ডট কমের আজকের বিশেষ আয়োজনে আমরা আলোচনা করব, কিভাবে সাধারণ মানুষের ব্রেণ ওয়াশ করে বিখ্যাত হওয়া যায় তা নিয়ে।
“ব্রেণ ওয়াশ” শব্দটি এতদিন পর্যন্ত আমরা ব্যবহার করেছি ভিন্নভাবে। জংঙ্গী গোস্টী সাধারণ মানুষের ব্রেণ ওয়াশ করে তাদের জঙ্গী বানিয়ে আত্নঘাতী হামলা করার কথা ইতিপূর্বে আমরা বহুবার শুনেছি। কিন্তু এই ব্রেণ ওয়াশ করে বা ব্রেণ হ্যাক করে সাধারণ মানুষদের দিয়ে আরও অনেক কাজই করানো সম্ভব। বাস্তব একটি উদাহরণ আমাদের সামনেই। ইতিপূর্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যারিস্টার সুমন এই একই প্রক্রিয়ায় অসংখ্য ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনে জয় লাভের পর সময় টিভির স্টাফদের সাথে আলোচনার একটি ভিডিও ইতিপূর্বে সোশিয়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি নির্বাচনে জয়লাভের জন্য তিনি যে কৌশল গ্রহণ করেছেন তা নিয়েও আলোচনা করেছেন খোলামেলাভাবে।
১। ভোটের ঠিক আগের দিন রেকর্ডের মোবাইল কলের মাধ্যমে তিনি ভোট চেয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ মনে করেছে তিনি ডাইরেক্ট কল দিয়ে ভোট চেয়েছেন। আসলে এটি প্রিরেকর্ড কল ছিল। তিনি নিজেই বিষয়টি ক্লিয়ার করেছেন। সাধারণ মানুষ এতে নাকি মনে করেছে , ব্যারিস্টার সুমন তো কল দিয়ে ভোট চেয়েছে। আর কেউ তো তাদের নাম্বারে কল দিয়ে ভোট চাইল না। তাই তাকেই ভোট দেয়া উচিত। ব্যারিস্টার সুমনের ভাষায়, এতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শ্রমিকদের ভোট তিনি পেয়েছেন।
২। সাধারণ মানুষকে তিনি বুঝিয়েছেন, নৌকা (সরকার দলের প্রার্থীর প্রতীক) এবং ঈগল (ব্যারিস্টার সুমনে প্রতীক) একই মায়ের পেটের দুই ভাই। নৌকাকে ভোট দেয়া আর তাকে ভোট দেয়া একই কথা।
৩। ভোট পাওয়ার জন্য তিনি ভোটারের লেভেলে নেমে তাদের সাথে কথা বলতে হয়েছে। যে যেমন বুঝে তাকে সেভাবেই বুঝাতে হয়েছে। আর এ কথা তিনি নিজের মুখেই বলেছেন সময় টিভির সাথে বিশেষ আলাপনে।
৪। বাগানী ভোট পাওয়ার জন্য তিনি শ্রমিকদের বলেছেন, তিনি নৌকার পক্ষের লোক। তাকে ভোট দিলেই না কি নৌকাতে ভোট দেয়া হবে। তিনি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বলেন, বাগানী লোকদের মাথার মধ্যে নৌকা নৌকা। এভাবে তিনি একাধিকবার নৌকা নৌকা করে।
তিনি ভোটারদের বলেন, আপনি কি সেই নৌকায় উঠবেন যে নৌকা মাঝ নদীতে গিয়ে ডুবে যায়? এতে ভোটাররা বলে, না না উঠতাম না (উঠব না)। এ কথা বলই তিনি হাসিতে ফেটে পড়েন। এতেই বুঝা যায় কত সহজে তিনি ভোটারদের বোকা বানিয়েছেন। ভোটারদের নিয়ে এভাবে তাচ্ছিল্য করা মুটেও শোভনীয় ছিল না।
ভিডিওটিতে একজন মন্তব্য করেন, “এতটা উৎসাহিত হয়ে সবকিছু খোলাসা করা ঠিক না। এতে বিপদ বাড়বে।”
এ সময় তিনি খোলাশা করে বলেন, কয়েক লেভেলের অডিয়েন্স রয়েছে। কেউ বুঝে না, কেউ কিছু বুঝে, কেউ চালাক। যে লেভেলের অডিয়েন্স যেমন তার কাছে তিনি তেমনভাবেই ধরা দিয়েছেন। আর তার এই কৌশল বেশ কাজ দিয়েছে যা আমরা ভোটের দিনই দেখতে পেলাম।
পুরো আড্ডাটি দেখলে আপনিও বুঝতে পারবেন , তিনি কত কৌশলে সাধারণ মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করে এত বিপুল ভোট পেয়েছেন।