হিট স্ট্রোক
হিট স্ট্রোকে প্রতিদিন মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্কুলের ছাত্র – ছাত্রী থেকে শুরু করে বয়স্ক এবং যারা রোদে কাজ করেন তারা মূলত হিট স্ট্রোকের ঝুকিতে রয়েছেন। তাছাড়া যাদের শরীর বেশী ফ্যাটি এবং যারা বেশী দুর্বল তাদেরও হিট স্ট্রোকের ঝুকি রয়েছে। বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশেই হিট ওয়েব চলছে। হিট স্ট্রোকে প্রতিদিন মৃত্যুহার বাড়ছে। এমনকি রেকর্ড পরিমাণ মৃত্যুহার হয়েছে এই বছরের চলিত হিট ওয়েবে। আসুন প্রতিকারগুলো জেনে রাখি।
ঢিলেঢালা পোশাক:
ঢিলেঢালা, হালকা রঙের, নরম পোশাক পরুন। এতে বাতাস শরীরে সহজে প্রবেশ করতে পারবে এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বের হতে পারবে। গরম কম অনুভুত হবে। সম্পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখে এমন পোশাক পরিদান করুন।
নরমাল পানি খান:
সাধারন ঠান্ডা তরল পান করুন এটি ডিহাইড্রেশন হওয়া থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। অধিক ঠান্ডা পানি সম্পূর্ণরুপে ত্যাগ করুন। অধিক ঢান্ডা বা বরফ পানির কারণে আপনার ফুসফুসে ইনফেকশন হতে পারে। এমনকি টনশিলে সমস্যাসহ সর্দি জ্বরের কারণ হতে পারে এই ঢান্ডা পানি। তাই নরমাল পানি খাবেন যেন ঘাম বেরিয়ে যাওয়ার পর পানি শুণ্যতার সৃষ্টি না হয়।
সেলাইন অল্প পরিমাণে খেতে পারেন:
গরম কম লাগার জন্য অনেকে অধিক মাত্রায় খাওয়ার সেলাইন পানিতে মিশিয়ে বার বার খেতে দেখা যায়। সেলাইনে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা অধিক মাত্রায় খেলে কিডনী ডেমেজ হওয়াসহ ব্রেণ ড্যামেজ হয়ে স্টোক করতে পারেন। তাই সেলাইন অল্প মাত্রায় খেতে পারেন যাদের শরীর বেশী ঘামে কেবল মাত্র তাদের জন্য। ঘরে বসে কাজ করলে সেলাইন না খাওয়া উত্তম।
ফ্যাটি খাবার পরিহার করুন:
অধিক চর্বি ও প্রোট্রিনযুক্ত খাবার সকালে ও দুপুরের সময় পরিহার করুন। এগুলো আপনার শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং আপনাকে ক্লান্ত করে তুলবে।
ঢান্ডা সবজি ও ফল খেতে পারেন:
শসা, তরমুজ, ডালিম এবং কলা খেতে পারেন। তবে সেটা অবশ্যই সীমিত আকারে খেতে হবে। বেশী খাবার গ্রহণ করলে মস্তিস্ক খাবার হজমে শক্তি নষ্ট করবে এবং আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন দ্রুত। সবজি হিসাবে পানি কদু কিংবা পেপের তরকারী বা সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে হবে।
রোদে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন:
গরমে বা ঘরের বাইরের কাজগুলো সকালে এবং সন্ধার দিকে করার চেষ্টা করুন। রোদে বের হতে হলে ছাতা নিয়ে বের হতে হবে। কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিতে হবে। সানগ্লাস ও
এসিতে বার বার প্রবেশ করবেন না:
আপনি যদি সারাদিন এসি রুমে থাকার অভ্যাস থাকে তবে সেটা ভিন্ন নয়ত বারবার কিছুক্ষণ পরপর এসি রুমে প্রবেশ করবেন না। এসি রুমের তাপমাত্রা ২৬/২৭ ডিগ্রিতে রাখুন। মসজিদে বা বেশী মানুষের সমাগম হয় এমন জায়গায় এসির সুব্যবস্থা থাকলে তা ২৪ ডিগ্রির নিচে রাখবেন না।
শরীর ফিট রাখুন:
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করে এবং সাঁতার কেটে শরীর ফিট রাখুন। দুপুরের সময় বা অধিক গরমের সময় বেশী পরিমানে ব্যায়াম বা অন্য কোন কাজ করা যাবে না। গরম কমে আসার পর কাজ করুন।
গোসলে সর্তকতা:
অনেকে গরম থেকে এসেই গোসলে ঢুকে পড়েন। এটা কোনভাবেই করা যাবে না। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার পর গোসল করুন।
হিট স্ট্রোকের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকলে, সকল প্রকার প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন। পাশাপাশি নিশ্চিত করুন যে কাছাকাছি তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা রয়েছে বা জরুরী প্রয়োজন হলে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার ব্যবস্থা আগে থেকে রাখতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ঔষুধ কিছু গ্রহণ করার ব্যবস্থা থাকলে তা আগে থেকে বাসায় রাখুন।