কালাপাহাড়
ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য আজকে বিশেষ আয়োজন কালাপাহাড়। পাহাড় প্রেমিকদের জন্য কালাপাহাড় হতে পারে বেস্ট একটি অপশন। সিলেট বিভাগের মধ্যেই এক দিনের মধ্যে একটি ব্যাস্ত ভ্রমণপ্লানের চিন্তা করে থাকলে কালাপাহাড় খুবই চমৎকার একটি জায়গা।
পোস্টের হাইলাইট
কালাপাহাড়ের অবস্থান
কালা পাহাড় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার কর্মধা ইউনিয়নে অবস্থিত। উচ্চতায় বাংলাদেশের চতুর্থ যার পরিমাণ প্রায় ১১০০ ফুট। এই পাহাড়ের উপর থেকে দূরের গ্রাম ও জনপদকে দেখার যে দৃশ্য তা একবার দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে।
কিভাবে যাত্রা শুরু করা উচিত?
আপনি বাংলাদেশের যেকোন যায়গা থেকে সকাল ৮ টার মধ্যে আসগরাবাদ অথবা কর্মধা বাশফিল্ডে চলে আসতে পারেন। এখানে এসে একটু খুজ নিলে গাইড পেতে পারেন অথবা যেসকল পাহাড়ী শ্রমিক ঐদিকে যাবে তাদের সাথেও যেতে পারেন।
কালাপাহাড়ে যেতে হলে সকাল ৮ টার মধ্যে যাত্রা শুরু করা উচিত। পাহাড় বেয়ে যেতে হলে তিন ঘন্টার মতো সময় লাগবে। আর ফেরার সময় যদি খাদের মধ্য দিয়ে আসেন তবে ভিন্ন এক অনুভূতি পাওয়া যাবে। মনে হবে যেন অ্যামাজন বা সুন্দরবনের কোন এক পাহাড়ী খাদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আর ফেরার সময় যদি আরও বেশী পাহাড় উপভোগ করতে চান তবে রোকনটিলা হয়ে ফেরতে পারেন। আপনার সাথে যদি কোন গাইড থাকে তবে তাকে আগে থেকেই বলে রাখতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে কিংবা বর্ষায় যখন যেতে চান দুটি ভিন্ন রূপের পাহাড় দেখতে পারবেন। যদি ঝর্ণা দেখার উদ্দেশ্য থাকে তবে বর্ষার সময়ে আসা উচিত। তবে বর্ষায় পাহাড় অনেক পিচ্ছিল হয়। তাই বর্ষার মৌসুমে মেঘহীন দিনে যাত্রা করতে পারেন যদি রিক্সমুক্ত থাকতে চান।
কালাপাহাড়ে কি কি দেখা যাবে?
আমরা সব সময়ই জনপদ থেকে পাহাড় দেখেছি কিন্তু পাহাড়ে গিয়ে জনপদের দিকে তাকালে জীবনের নতুন এক মর্ম উপলব্দী করতে পারবেন। পাহাড়ের ভেতরে গিয়ে পাহাড়কে দেখার যে অনুভূতি তা শতভাগ ফিল করা সম্ভব এই পাহাড়ে।
কালাপাহাড়ে যাত্রা সর্তকতা
শিশু ও মহিলাদের জন্য রিক্সি হতে পারে। বিশেষ করে পাহাড়ী রাস্তা খাড়া উপরের দিকে ঢাল রয়েছে। কয়েকটি পাহাড় তাই বেশ ঝুকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা না থাকলে শিশুদের নেয়া উচিত না।
কালাপাহাড়ের কিছু সৌন্দর্য
যাবার সময় যদি খাশিয়া পুঞ্জি হয়ে যান তবে খাশিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি আপনাকে দিবে বাড়তি কিছু দেখার সুযোগ। পানগাছ ও খাশিয়া সম্প্রদায়ের জীবন যাপনের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।
পাহাড়ের মধ্য দিয়ে উচু নিচু গাছের সারির পাশ দিয়ে একবার উঠে যাবেন পাহাড়ের উপরে আবার নেমে আসবেন পাহাড়ের নিচে। এভাবেই যেতে যেতে একসময় জয় করতে পারবেন কালা পাহাড়।
কালাপাহাড়ের পাদ্বদেশ। ভুমি থেকে ১১০০ ফুট উপরে দাড়িয়ে সবাই ফেলে আসা জনপদ আর দূরের পাহাড়ের ঢেউ দেখছে। আর আমি তাদের ক্লান্ত শরীরে মুখে লেগে থাকা এক ঝলক খুশি দেখছি।
সবাই যখন পাহাড়ের উপর দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। আমি এই সুযোগে এই ঝর্নার দ্বারে এসে মোবাইলে ওয়াটারফলের একটি চমৎকার সাউন্ড রেকর্ড করে নিয়ে এসেছি। এই সাউন্টটি নিকট ভবিষ্যতে আমার পরবর্তী একটি ক্রিয়েশনে যুক্ত করব ইনশাল্লাহ। আসলে প্রতিটি ভ্রমণ থেকে আপনি যদি চোখ আর ব্রেণ খোলা রাখেন তবে চমৎকার কিছু নিজস্ব অনুভূতি ও পরিকল্পনার বীজ রোপন করে নিয়ে আসতে পারবেন।
সম্ভব হলে এক্সট্রা স্পঞ্জের জুতা সাথে রাখতে পারেন। বুট জুতা খুলে এসব রাস্তা পার হতে হবে। অথবা হিলবুট সাথে নিতে পারেন।
পাহাড়ের মধ্যে যদি বর্ষার সময়ে যান তবে ঝর্ণা দেখার সুযোগ পাবেন। ঝর্ণায় গোসল করার যাদের আগ্রহ বেশী তারা বর্ষার সময়ে কালা পাহাড় দেখতে যেতে হবে।
সর্তকতা – এরকম কাদাযুক্ত রাস্তা ধরে হাটতে হবে। এই যাত্রা পথে দেখা হয়ে যেতে পারে হাতির সাথে। তাই মানষিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই যেতে হবে। ভয় পেলে হবে না। পা কাটার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সব বিষয়ে সব সময় প্রস্তুত থাকা উচিত হবে। হয়ত বন্য কোন সাপের সামনেও পড়ে যেতে পারেন। সব সময় উপস্থিত বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে সামনের সমস্যা মুকাবেলা করা লাগতে পারে।
কালা পাহাড় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিডিও টি দেখতে পারেন
উপসংহার – আশা করছি সংক্ষেপে কালা পাহাড়ের কিছু বিবরণ তুলে ধরতে পেরেছি। ধন্যবাদ , ভাল থাকুন।