সুরা হুদ ও তওবার বারকত

সুরা হুদ

পবিত্র কোরআনের এ অংশে আমাদের দৈনন্দিন জীবন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যে দিক-নির্দেশনা রয়েছে:

সূরা হুদ

১. কোনো অপরাধ হয়ে গেলে মুমিন বান্দার কর্তব্য দ্রুত আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ও সঠিক পথে ফিরে আসা। বান্দা তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করেন এবং তাকে তার রিজিকসহ সব ক্ষেত্রে বরকত দান করেন। কোরআনে আল্লাহর নবি হুদের (আ.) কথা বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তার জাতিকে বলেছিলেন, হে আমার জাতি, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তার কাছে তাওবা কর, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না। (সুরা হুদ: ৫২)

২. আল্লাহর ফয়সালা ও রহমতের প্রতি ভরসা এবং বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণ করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মুমিন বান্দা যদি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহর তার ওপর সন্তুষ্ট হন এবং তার শেষ পরিণাম উত্তম হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ধৈর্য ধর, শুভ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্যই নির্দিষ্ট। (সুরা হুদ: ৪৯)

৩. ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পন্য ও মূল্য যথাযথভাবে হস্তান্তর করা উচিত। ওজনে কম দেওয়া হারাম। সব যুগেই এ রকম অসততা হারাম ছিল। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, নবি শুআইব (আ.) তার জাতিকে এ রকম গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর মাদায়েনে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ভাই শোয়াইবকে। সে বলল, ‘হে আমার জাতি, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ নেই এবং মাপ ও ওজনে কম করো না; আমি তো তোমাদের প্রাচুর্যশীল দেখছি আর আমি তোমাদের ওপর এক সর্বগ্রাসী দিনের আজাবের ভয় করি। হে আমার জাতি, মাপ ও ওজন পূর্ণ কর ইনসাফের সাথে এবং মানুষকে তাদের পণ্য কম দিও না; আর জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িও না। (সুরা হুদ: ৮৪, ৮৫)

৪. কেউ কোনো অন্যায় বা পাপ করলে তাকে ওই কাজ থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিতে হবে, সামর্থ্য থাকলে বাধা দিতে হবে। তাকে সহায়তা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো গুনাহের কাজে সমর্থন বা সহযোগিতা করলে নিজে গুনাহ না করেও শাস্তির ভাগীদার হতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না, তাহলে আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে, আর তখন আল্লাহ ছাড়া কেউ তোমাদের অভিভাবক থাকবে না, অত:পর তোমাদেরকে সাহায্যও করা হবে না। (সুরা হুদ: ১১৩)

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *